পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা কিন্তু সহজ নয় : অর্থ উপদেষ্টা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা কিন্তু সহজ নয়’— এমন মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে কাজ হচ্ছে। এগুলো ট্রেস করা হচ্ছে। সময় লাগবে, তবুও প্রোগ্রেস হচ্ছে। আমরা বলেছি এক বা আধা-বছর লাগতে পারে, সেই প্রসেস শুরু হয়েছে, এটা সত্য।”

 

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে বাজেটে কী আছে— জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “পাচার হওয়া কালো টাকা দেশে আনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে কাজ হচ্ছে। পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা কিন্তু সহজ না। যারা টাকা পাচার করে তারা খুব বুদ্ধিমান লোক, লেয়ারিং করে করে টাকা পাচার করে, এমন না যে ধপ করে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। আপনি কোথায় টাকা পাঠাবেন সেটা কিন্তু সরাসরি যায় না, ঘুরে ঘুরে যায়। এগুলো ট্রেস করা হচ্ছে। সময় লাগবে, তবুও প্রোগ্রেস হচ্ছে।”

 

তিনি বলেন, “নাইজেরিয়াতে ২০ বছর লেগেছে। আমরা বলেছি এক-আধা বছর লাগতে পারে, সেই প্রসেস শুরু হয়েছে, এটা সত্য।” কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কালো টাকা পেলে আমার বাজেট সাপোর্ট কম লাগত। আইএমএফ-এর কাছে যেতে হতো না। দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেটা পারি নাই।”

 

“কালো টাকাটা হলো অপ্রদর্শিত আয়। বাজেটে ফ্ল্যাটের ব্যাপারে শুধু বিধান দেওয়া হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার দুটি দিক আছে— একটা হলো নৈতিক দিক, আরেকটা হলো প্র্যাকটিক্যাল দিক; আমরা ট্যাক্স পাব কি না। দুই দিকে যাতে কালো টাকাটা সাদা করা যায় সেই সুযোগ থাকলে আমরা সেটা বিবেচনায় আনব।”

 

বাজেট বৈষম্যবিরোধী হয়েছে বলা যাবে না— উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাজেটে মহিলাদের জন্য ফান্ড আছে, স্টার্টআপের জন্য অর্থ বরাদ্দ আছে, যুবকদের জন্য টাকা দিচ্ছি। বাকি অনেক খাতের জন্যও অর্থ আছে। একেবারে কর্মসংস্থানহীন সেটা কিন্তু না। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক কিছুর ট্যারিফ উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, বন্ডেড ওয়্যারহাউজ করা হয়েছে।”

 

ফুটপ্রিন্ট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “আমরা কী ফুটপ্রিন্ট দিয়ে যাচ্ছি, আমরা যে ভালো কাজটা করে যাচ্ছি সেটা পরবর্তী সরকার যদি কন্টিনিউ করে, যদি সেটা না করে তাহলে আপনারা তাদের প্রশ্ন করতে পারেন। আমরা যদি খারাপ কাজ করে থাকি তাহলে বলতে পারেন এটা ভালো না, বাদ দিয়ে দাও। কিন্তু আমরা সে ধরনের কাজ করছি না।”

 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ জ্বালানি সড়ক সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; বাণিজ্য, বিমান, বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন; মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের প্রধানরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» শপথ নিলেন হাইকোর্টের নবনিযুক্ত ২৫ বিচারপতি

» বিশেষ অভিযান মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত এক হাজার ৭১১ জন গ্রেফতার

» দেশের তিনটি বিভাগে ভারী বৃষ্টি হতে পারে

» ১৩০ কোটি টাকার মাদকসহ নারী যাত্রী আটক

» মুন্সিগঞ্জে পুলিশের ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» আজ মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

» উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুদকের অভিযান 

» ব্যাংকাস্যুরেন্সের মাধ্যমে গার্ডিয়ানের ৫ হাজার পলিসি বিক্রি করেছে সিটি ব্যাংক

» বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে এসএমই উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু

» ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পিবিআই পুলিশের  হাতে গ্রেপ্তার ২

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা কিন্তু সহজ নয় : অর্থ উপদেষ্টা

সংগৃহীত ছবি

 

অনলাইন ডেস্ক : দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা কিন্তু সহজ নয়’— এমন মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে কাজ হচ্ছে। এগুলো ট্রেস করা হচ্ছে। সময় লাগবে, তবুও প্রোগ্রেস হচ্ছে। আমরা বলেছি এক বা আধা-বছর লাগতে পারে, সেই প্রসেস শুরু হয়েছে, এটা সত্য।”

 

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

 

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার বিষয়ে বাজেটে কী আছে— জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “পাচার হওয়া কালো টাকা দেশে আনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে কাজ হচ্ছে। পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা কিন্তু সহজ না। যারা টাকা পাচার করে তারা খুব বুদ্ধিমান লোক, লেয়ারিং করে করে টাকা পাচার করে, এমন না যে ধপ করে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। আপনি কোথায় টাকা পাঠাবেন সেটা কিন্তু সরাসরি যায় না, ঘুরে ঘুরে যায়। এগুলো ট্রেস করা হচ্ছে। সময় লাগবে, তবুও প্রোগ্রেস হচ্ছে।”

 

তিনি বলেন, “নাইজেরিয়াতে ২০ বছর লেগেছে। আমরা বলেছি এক-আধা বছর লাগতে পারে, সেই প্রসেস শুরু হয়েছে, এটা সত্য।” কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “কালো টাকা পেলে আমার বাজেট সাপোর্ট কম লাগত। আইএমএফ-এর কাছে যেতে হতো না। দুর্ভাগ্যবশত আমরা সেটা পারি নাই।”

 

“কালো টাকাটা হলো অপ্রদর্শিত আয়। বাজেটে ফ্ল্যাটের ব্যাপারে শুধু বিধান দেওয়া হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার দুটি দিক আছে— একটা হলো নৈতিক দিক, আরেকটা হলো প্র্যাকটিক্যাল দিক; আমরা ট্যাক্স পাব কি না। দুই দিকে যাতে কালো টাকাটা সাদা করা যায় সেই সুযোগ থাকলে আমরা সেটা বিবেচনায় আনব।”

 

বাজেট বৈষম্যবিরোধী হয়েছে বলা যাবে না— উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাজেটে মহিলাদের জন্য ফান্ড আছে, স্টার্টআপের জন্য অর্থ বরাদ্দ আছে, যুবকদের জন্য টাকা দিচ্ছি। বাকি অনেক খাতের জন্যও অর্থ আছে। একেবারে কর্মসংস্থানহীন সেটা কিন্তু না। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অনেক কিছুর ট্যারিফ উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, বন্ডেড ওয়্যারহাউজ করা হয়েছে।”

 

ফুটপ্রিন্ট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “আমরা কী ফুটপ্রিন্ট দিয়ে যাচ্ছি, আমরা যে ভালো কাজটা করে যাচ্ছি সেটা পরবর্তী সরকার যদি কন্টিনিউ করে, যদি সেটা না করে তাহলে আপনারা তাদের প্রশ্ন করতে পারেন। আমরা যদি খারাপ কাজ করে থাকি তাহলে বলতে পারেন এটা ভালো না, বাদ দিয়ে দাও। কিন্তু আমরা সে ধরনের কাজ করছি না।”

 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ জ্বালানি সড়ক সেতু ও রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান; স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী; বাণিজ্য, বিমান, বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন; মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ; কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের প্রধানরা।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com